কুরিয়ার সার্ভিস কি? কি ধরনের পন্য কুরিয়ারে বুকিং করা যায় আর কি ধরনের পণ্য বুকিং করা যায়না? যথাসময়ে পেতে হলে ঠিকানা কিভাবে লিখতে হবে?
- বাংলাদেশ একটি ছোট দেশ কিন্তু বেশ জনবহুল। এই জনবহুল দেশে প্রয়োজনটা যে বেশি হবে এটাই স্বাভাবিক। প্রতিনিয়ত প্রান্ত থেকে প্রান্ত ছড়িয়ে পরছে তারা প্রয়োজনের তাগিদেই। ছুটে চলেছে দেশ হতে দেশান্তরে। এই ছুটে চলার সময় মানুষের অনেক কিছুই প্রয়োজন হতে পারে। কিন্তু সবসময় মানুষ তা সঙ্গে নিতে পারেন না। কখনো বা পণ্যের আধিক্য সমস্যা আবার কখনো বা ট্রানজিট সমস্যা।যার কারণে কখনো ব্যবসায়িক প্রয়োজনে আবার কখনো ব্যক্তিগত প্রয়োজনে মালামাল আনা নেয়ার প্রয়োজন হযে পরে। মালামাল পরিবহনের এই জরুরী কাজটা নিজে না করে অন্যের মাধ্যমে সেরে নেয়ার জন্য সবাই বিভিন্ন রকমের পরিবহনের শরণাপন্ন হন। এই পরিবহন ব্যবস্থাগুলো নির্ধারিত হারে ভাড়া আদায়ের মাধ্যমে গ্রাহকের মালামাল পরিবহন করে থাকে। ভাড়ায় মালামাল পরিবহনের এই প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাাপনার নামই হচ্ছে কুরিয়ার সার্ভিস।
- Customs Act, 1969 (Act No. IV of 1969) এর সেকশন ২ এর (গ) অনুযায়ী, “কুরিয়ার সার্ভিস” অর্থ এমন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান, যিনি মেইলিং অপারেটর ও কুরিয়ার সার্ভিস বিধিমালা, ২০১৩ এর অধীন এন বোর্ড ও আন্তর্জাতিক লাইসেন্সপ্রাপ্ত মেইলিং অপারেটর ও কুরিয়ার সার্ভিস।
- আমাদের দেশে দুই ধরনের কুরিয়ার সার্ভিস ব্যবস্থা চালু আছে। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক। আবার দেশীয় কুরিয়ার সার্ভিস ও বৈদেশিক পন্য পরিবহন করে থাকেন।প্রায় ৪২ টির মতো প্রতিষ্ঠান দেশীয়ভাবে কুরিয়ার সেবা দিয়ে আসছে। দেশীয় কুরিয়ার সার্ভিস গুলির মধ্যে পরিচিত কয়েকটি কুরিয়ার সার্ভিস হচ্ছে....
- সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিস (প্রাঃ) লিঃ।
- করতোয়া কুরিয়ার সার্ভিস লিঃ।
- ড্রীমল্যান্ড কুরিয়ার সার্ভিস লিঃ।
- কন্টিনেন্টাল কুরিয়ার সার্ভিস লিঃ।
- জনতা কুরিয়ার সার্ভিস লিঃ।
- এস.এ পরিবহন।
- এস.আর পার্সেল সার্ভিস।
- কে. সি. এস কুরিয়ার সার্ভিস।
- আরামেক্স কুরিয়ার সার্ভিস।
- গ্রামীন কুরিয়ার সার্ভিস।
- হোম বাউন্ড কুরিয়ার সার্ভিস।
- ওভারসীজ কুরিয়ার সার্ভিস।
- অপরদিকে আন্তর্জাতিক কুরিয়ার সার্ভিসগুলির মধ্যে পরিচিত কয়েকটি হচ্ছে....
- ইউএস বাংলা কুরিয়ার সার্ভিস।
- ফেডেক্স।
- ডিএইচএল।
- পার্সেল ফোর্স এক্সপ্রেস।
এবার আমর জানবো কি ধরনের পণ্য এসব পরিবহন ব্যবস্তায় বুকিং করা যাবে আর কি ধরনের পণ্য বুকিং করা যাবেনা...
⇒কি ধরনের পন্য কুরিয়ারে বুকিং করা যায় ?
- কুরিয়ার সার্ভিসে মালামাল বুকিং এর ক্ষেত্রে আমরা “Customs Act, 1969 (Act No. IV of 1969)” আইনটি মান্য করব। এই আইনের বিধান মতে, নিষিদ্ধ মালামাল ব্যতীত সব ধরনে মালামাল কুরিয়ারে বুকিং করা যাবে। তবে কিছু ক্ষেত্রে মালামাল বুকিং এ বাধা নিষেধ না থাকলেও কিছু পণ্য আছে যা কুরিয়ারে সার্ভিসে বুকিং করা যায় না, যা আমরা নিষিদ্ধ মালামালের বিবরন তুলে ধরার সময় উল্লেখ করব।
- প্রথমেই বলেছি, কুরিয়ারে মালামাল পরিবহনের ক্ষেত্রে আমাদের “Customs Act, 1969 (Act No. IV of 1969)” এর বিধিসমূহ মান্য করা উচিত। তারপরও কি ধরনের পণ্য আমরা কুরিয়ারে বুকিং করবনা বা করা নিষিদ্ধ, তা জানার জন্য আমি পন্যগুলিকে দুই ক্যাটাগরিতে উল্লেখ করব। যার প্রথম ক্যাটাগরি হচ্ছে ’নিষিদ্ধ পন্য’ যা বুকিংং করা আ্ইনতঃ দন্ডনীয় অপরাধ। দ্বীতিয় ক্যাটাগরি হচ্ছে ‘আইনতঃ নিষিদ্ধ নয়” কিন্তু পণ্যের ধরণ ও নিরাপত্বাজনিত কারণে বুকিং করা ঠিক না। চলুন তাহলে, আমরা একটু পর্যালোচনা করে দেখি কি পণ্য আমরা কুরিয়ার সার্ভিসে বুকিং করবনা।
১। আইনতঃ নিষিদ্ধ পন্য :-
কুরিয়ারে বুকিং করা আইনতঃ নিষিদ্ধ, এরকম পণ্যগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছ........
- মাদক দ্রব্য: - “Customs Act, 1969 (Act No. IV of 1969)” এর বিধি অনুযায়ী যে কোন ধরণের মাদকদ্রব্য বুকিং করা যাবেনা। যদি কোন ব্যক্তি সাক্ষাতে বা অগোচরে কোন প্রকার মাদক দ্রব্য কুরিয়ারে বুকিং করার চেষ্টা করেন, তবে বুকিং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা তাকে তা করা হতে বিরত রাখার চেষ্টা করেবেন। এবং সেই সাথে তাকে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে সোপর্দ করবেন। আটককৃত ব্যক্তি ’মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮’ এর বিধি অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য হবে।
- তরল বস্তু :- যে কোন ধরনের তরল বস্তু কুরিয়ারে বুকিং করা যায়না। কারণ, বুকিং কৃত তরল বস্ত পরিবহনে লোডকৃত অন্য মালামালের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। হতে পারে বুকিংকৃত তরল বস্ত কোন প্রকার মাদক বা মাদকের কাঁচামাল।
- চোরাই মাল :- যে কোন ধরনের চোরাই মাল কুরিয়ারে বুকিং করা নিষিদ্ধ। হতে পারে বুকিং কর্মকর্তা জানেনা। কিন্তু যদি কোন অভিযোগ আসে যে অমুক ব্যক্তি কুরিয়ারে চোরাই মাল বুকিং করেছেন, তবে তাকে আটক করে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তুলে দেয়া হবে। এবং বুকিং কৃত পণ্য জব্দ করে সংশ্লিষ্ট থানায় জমা দেয়া হবে।
- সরকারি মালামাল :- কোন প্রকার সরকারি মালামাল সরকারের সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে অবহিত না করে স্থানান্তরের উদ্দেশ্যে কুরিয়ারে বুকিং করা নিষিদ্ধ।
- ভেজাল পণ্য :- বিএসটিআই কতৃক যে সকল পণ্য ভেজাল হিসেব চিহ্নিত হয়, তা বাজারে সরবরাহ করার উদ্দেশ্যে কুরিয়ারে বুকিং করা নিষিদ্ধ।
- অস্ত্র ও ধ্বংসাত্মক বস্তু :- যে কোন ধরনের বৈধ ও অবৈধ অস্ত্র ও ধ্বংসাত্মক বস্তু কুরিয়ারে বুকিং করা নিষিদ্ধ। যদি কোন ব্যক্তি এ ধরনের কোন কাজ করার চেষ্টা করেন, তবে তাকে আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তুলে দেয়া হবে।
- পার্সেল বা ডকুমেন্টের প্যাকেটে টাকা :- যে কোন ধরনের পার্সেল বা ডকুমেন্টের প্যাকেটে টাকা পাঠানো নিষিদ্ধ। দয়া করে কেউ এই কাজটি করতে যাবেন না। এতে আপনি টাকাটাও হারাবেন সেই সাথে আইনের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হতে পারে। যে কুরিয়ারের মাধ্যমে আপনি টাকাটা পাঠাতে চান তাদের কাছে জেনে নিবেন যে তাদের সার্ভিসে টাকা পাঠানোর কোন সিস্টেম আছে কি না? যদি থাকে তবেই কেবল তাদের বুকিং পদ্ধতি ফলো করে টাকাটা বুকিং করবেন।
- পার্সেল বা ডকুমেন্টের প্যাকেটে চেক :- পার্সেলের ভিতরে লুকিয়ে কোন প্রকার ব্যাংক চেক বা ইস্যুকৃত কোন চেকের পাতা বুকিং করা নিষিদ্ধ। প্রত্যেকটি কুরিয়ার সার্ভিসের পরিবহন সিস্টেমেই এইভাবে চেক বই পাঠানো নিষিদ্ধ। যদি কেহ কোন প্রকার চেক বই বা চেকের ইস্যুকৃত পাতা পাঠাতে চান তবে অবশ্যই তা সংশ্লিষ্ট বুকিং ম্যানের কাছে জানতে চাইবেন এবং পরামর্শ করবেন। অন্যথায় যিনি অবৈধভাবে বুকিং করবেন তিনি আইনতঃ দন্ডনীয় হবেন। সেই সাথে চেকটি নষ্ট বা হারিয়ে গেলে তিনি কোন প্রকার দাবী করতে পারবেন না।
- স্বর্ণ ও রৌপ্য :- স্বর্ণ, রৌপ্য সহ অন্যান্য মূল্যবান ধাতব বস্তু ও এসব ধাতব বস্তুর তৈরী কোন গহনা কুরিয়ারে বুকিং করা নিষিদ্ধ। যদি কোন ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট বুকিং ম্যানকে না জানিয়ে এ ধরনের কোন কাজ করার চেষ্টা করেন তবে তিনি অবশ্যই আইনতঃ শাস্তিযোগ্য হবেন।
২। আইনতঃ নিষিদ্ধ নয় :-
কিছু পণ্য আছে যা কুরিয়ারে বুকিং করা আইনত দন্ডনীয় নয়। কিন্তু ব্যক্তিগত নিরাপত্বা ও পণ্যের কথা চিন্তা করে নিম্নলিখিত পণ্যগুলি কুরিয়ারে বুকিং করা উচিৎ না। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে......
- সার্টিফিকেট :- যে কোন মূল সনদ্পত্র কুরিয়ারে বুকিং করা উচিৎ না। অধিক সতর্কতা সত্বেও যদি কোন ক্রমে ডকুমেন্টটি নষ্ট বা হারিয়ে যায়, তবে এর ক্ষতি পূরণ কিন্ত কোন কুরিয়ার বুকিংকারীকে দিতে পারবেনা। বড়জোর তারা কিছু আর্থিক জরিমানা দিতে পারে কিন্তু ভোগান্তি কিন্তু বুকিংকারীকেই পোহাতে হবে।
- এ্যাডমিট কার্ড :- আসন্ন কোন পরীক্ষা যা পরবর্তী চার দিনের মধ্যে সংঘটিত হতে পারে, এমন কোন পরিক্ষার এ্যাডমিট কার্ড কেউ কুরিয়ারে বুকিং করবেন না।
- পুনরোদ্ধার অযোগ্য কোন ডকুমেন্ট :- পুনরুদ্ধার করা সম্ভব নয়, এমন কোন ডকুমেন্টের মূলকপি কুরিয়ারে বুকিং করা উচিৎ না। তাতে হারিয়ে বা নষ্ট হয়ে গেলে বুকিংকারীকেই ভোগান্তি পোহাতে হবে।
- দলিলপত্র :- স্থাবর-অস্থাবর যে কোন প্রকার সম্পত্তির দলিলপত্রের মূলকপি কুরিয়ারে বুকিং করা উচিৎ না। যদিও তা বুকিং করাতে কোন প্রকার আইনগত নিষেধাজ্ঞা নেই।
- টিকিট :- কোন প্রকার টিকিট যা পরবর্তী তিনদিনের মধ্যে যাত্রা শুরু হবে, তা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে না পেলে যাত্রা মিস হবে, বা টিকিট হারিয়ে বা নষ্ট হয়ে গেলে উদ্ধার করা সম্ভব নয়, তা কুরিয়ারে বুকিং করা উচিৎ না।
- ভোটার আইডি :- ভোটার আইডি কার্ড যে কোন কুরিয়ারে বুকিং করা উচিৎ না। যদিও তা করা যায়। কিন্তু কোনভাবে যদি তা হারিয়ে যায় বা নষ্ট হয়ে যায়, তবে কোন কুরিয়ার কিন্তু বুকিংকারীকে কার্ডটা ফেরত দিতে পারবেনা। তাই ঝামেলা কিন্তু বুকিংকারীকেই পোহাতে হবে।
- পাসপোর্ট :- দেশের সব কুরিয়ার সার্ভিসে পাসপোর্ট বুকিং সিস্টেমটি চালু থাকলেও তা কুরিয়ারে বুকিং করা উচিৎ না। তবে যেহেতু কুরিয়ার সার্ভিসে পাসপোর্ট বুকিং সিস্টেমটি চালু আছে, অধিক নিরাপত্বা সাপেক্ষে কেহ এই কুরিয়ারের এই সেবাটি নিতে পারে।
- হিমায়িত পণ্য :- যে কোন ধরনের হিমায়িত পণ্য কুরিয়ারে বুকিং করা উচিৎ না। কারণ, সকল কুরিয়ারে হিমায়িত পণ্য পরিবহন করার মতো ব্যবস্থা থাকেনা। যার দরুন বুকিংকৃত পণ্যের বরফ অংশ গলে পণ্যটি নষ্ট হয়ে যাবে। সেই সাথে তা গাড়ীতে রাখার অন্যান্য পণ্যের জন্যও ক্ষতির কারণ হবে।
- পঁচনশীল পণ্য :- যে কোন ধরনের পঁচনশীল পণ্য কুরিয়ারে বুকিং করা উচিৎ না। তাতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পণ্যটি ডেলিভারি না হলে পণ্যটি পঁচে নষ্ট হয়ে যাবে। এর জন্য সংশ্লিষ্ট কুরিয়ার সার্ভিস নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ডেলিভারী না দিতে পারার কারণে ক্ষতিপূরণ দিতে পারে। কিন্তু বুকিংকৃত পণ্যটি তো আর দিতে পারবেনা।
- অধিক মূল্যবান বস্তু :- অধিক মূল্যবান বস্তু কোন কুরিয়ারে বুকিং করা উচিৎ না। বুকিংকারীর মনে রাখা উচিৎ যে, যিনি বুকিংটা নিচ্ছেন, তিনি টাকার বিনিময়ে বুকিংটা নিচ্ছেন। তিনি অধিক যত্নের সাথে পার্সেলটি পাঠানোর ব্যবস্থা করবেন। কিন্তু যেখানে যেখানে এই পার্সেলগুলি লোড আনলোড হবে, সেখানে যারা কর্মরত, তারা কিন্তু বুকিংকারীর কাছে আস্থার পাহাড় হয়ে যায় নি। পরে বুকিং অফিসের ভাল সম্পর্কের মানুষটার সাথেও সম্পর্কটা নষ্ট হবে। আর আফসোস বা ঝামেলায় পড়তে হলে বুকিংকারীকেই পড়তে হবে।
- কাঁচের তৈরী জিনিসপত্র :- যে কোন ধরনের কাঁচের বস্তু কুরিয়ারে বুকিং করা উচিৎ না। তাতে ক্ষতি কিন্তু বুকিংকারিরই হবে। অধিক সতর্কতা সত্বেও পার্সেলটি ভেঙ্গে যেতে পারে।
- নিয়োগপত্র :- ধরুন কোন ব্যক্তির কোন প্রতিষ্ঠানে বা সরকারি কোন সেক্টরে চাকরী হয়েছে। এবার নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান প্রার্থীর মেইল এড্রেসে নিয়োগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছে যা প্রার্থীর বাসার ঠিকানায় পৌছে গেছে। এবার প্রার্থী সেই নিয়োগপত্র দূরের কোন অবস্থান থেকে কুরিয়ার বা ডাকযোগে পেতে চাচ্ছেন। ভুলেও কখনো এই নিয়োগপত্র কোন কুরিয়ার বা ডাকযোগে নিতে চাওয়া উচিৎ না। বরং কাউকে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা দিয়ে নিয়ে আসাই উত্তম। মনে রাখা উচিৎ যে, চাকরীটা কিন্তু হয়ে গেছে। নিয়োগ হলেই দুই হাজার টাকা কোন ব্যাপারই না। কোন ক্রমে কুরিয়ারে বা ডাকে তা হারিয়ে গেলে বা নির্ধারিত সময়ে না পৌছলে চাকরী হারানোর আফসোস আর কষ্ট প্রার্থীকেই পোহাতে হবে।
- সময়সাপেক্ষ ডকুমেন্ট :- বুকিং করার পরবর্তী দুদিনের মধ্যে পেতে হবে, না পেলে বুকিংকারীকে বড় রকমের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে, এরকম কোন ডকুমেন্ট কোন কুরিয়ারে বুকিং না করাই শ্রেয়। বড়ং তা লোক মারফতে আনার বা পাঠানোর ব্যবস্থা করাই শ্রেয়। ধরুন, কোন ব্যক্তি তার ডকুমেন্ট রংপুরে ০৫/০৫/২০২০ ইং তারিখে বুকিং করেছেন, ডকুমেন্টটি চট্টগ্রাম কিংবা সিলেট যাবে, সে ক্ষেত্রে প্রাপক কখনোই ডকুমেন্টটি ০৬/০৫/২০২০ ইং তারিখে হোম ডেলিভারী পাবেন না। বরং প্রাপক সর্বোচ্চ এই ডকুমেন্ট টি সংশ্লিষ্ট জোনের কুরিয়ার ব্রাঞ্চ যেখান থেকে হোম ডেলিভারি সার্ভিসটি পরিচালনা করা হয়, সেই অফিস থেকে অফিস ডেলিভারী নিতে পারেন।
⇒ যথাসময়ে পেতে হলে ঠিকানা কিভাবে লিখতে হবে?
অনেক সময়ই দেখা যায় যে বুকিংকৃত পণ্য প্রাপক যথাসময়ে পাচ্ছেন না। অথচ ডেলিভারির জন্য নির্ধারিত সময় পার হয়ে গেছে। সেক্ষেত্রে দেখা যায় যে, প্রাপকের ঠিকানায় ভুল আছে বা ঠিকানা অসুম্পুর্ণ। আবার দেখা যায় বুকিংকৃত পণ্যে ঠিকানা একভাবে লেখা আছে কিন্তু রিসিভার আরেকভাবে পেতে চায়। তখন এই সমস্যাগুলো তৈরী হয় যে প্রাপক যথাসময়ে তা পাচ্ছেন না। অতএব বুকিংকারীর বুকিংকৃত পণ্য যথাসময়ে পেতে হলে আমরা কিভাবে ঠিকানা লিখবো তা এ পর্যায়ে আলোকপাত করব।
যে কোন কুরিয়ারে বুকিংকৃত পণ্য ডেলিভারির পদ্ধতি দুই ধরনের হয়ে থাকে। যেমন...
১। অফিস ডেলিভারি :- কুরিয়ারের ভাষায় ’অফিস ডেলিভারি’ বলতে বুঝায় বুকিংকৃত পণ্যটি ডেলিভারির ঠিকানা সংশ্লিষ্ট জোনের কুরিয়ার সার্ভিসের অফিসে পৌছানোর পর প্রাপক ঐ কুরিয়ার অফিসে গিয়ে রিসিভ করবে। বুকিংকৃত সকল পণ্য অফিস ডেলিভারি হয়।
২। হোম ডেলিভারি :- কুরিয়ারের ভাষায় ’হোম ডেলিভারি’ বলতে বুঝায় বুকিংকৃত পণ্যটি প্রাপকের ঠিকানা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট এলাকায় পৌছানোর পর কুরিয়ার ম্যান গিয়ে প্রাপকের ঠিকানায় পৌছে দিয়ে আসবে।
↠↠ এই দুই পদ্ধতির ডেলিভারির ক্ষেত্রে ঠিকানা লেখার পদ্ধতি দুই ধরনের হবে। একভাবে ঠিকানা লিখে আরেকভাবে পেতে চাইলে তৈরী হয় জটিলতা। যাই হোক, এবার দেখা যাক, আমরা কিভাবে সঠিক ঠিকানা লিখবো।
১। অফিস ডেলিভারির জন্য : - যদি কোন গ্রাহক তার বুকিংকৃত পণ্য অফিস ডেলিভারি নিতে চান তবে প্রাপকের পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা লিখার প্রয়োজন নেই। আবার কোন গ্রাহক প্রাপকের পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা লিখার পর যদি অফিস ডেলিভারি নিতে চান তবে ঠিকানা শেষে কোন অফিস থেকে নিতে চান, সেই অফিসের নাম স্পষ্টাক্ষরে মেনশন করে দিতে হবে। তাহলে প্রাপক সংশ্লিষ্ট অফিস থেকে ডেলিভারিটা নিতে পারবেন। আমি নিম্নে দুটি ঠিকান মেনশন করছি, যা পর্যবেক্ষণে আমার লেখা পরিস্কার হবে।
২। হোম ডেলিভারি :- কুরিয়ারের ভাষায় ’হোম ডেলিভারি’ বলতে বুঝায় বুকিংকৃত পণ্যটি প্রাপকের ঠিকানা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট এলাকায় পৌছানোর পর কুরিয়ার ম্যান গিয়ে প্রাপকের ঠিকানায় পৌছে দিয়ে আসবে।
↠↠ এই দুই পদ্ধতির ডেলিভারির ক্ষেত্রে ঠিকানা লেখার পদ্ধতি দুই ধরনের হবে। একভাবে ঠিকানা লিখে আরেকভাবে পেতে চাইলে তৈরী হয় জটিলতা। যাই হোক, এবার দেখা যাক, আমরা কিভাবে সঠিক ঠিকানা লিখবো।
১। অফিস ডেলিভারির জন্য : - যদি কোন গ্রাহক তার বুকিংকৃত পণ্য অফিস ডেলিভারি নিতে চান তবে প্রাপকের পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা লিখার প্রয়োজন নেই। আবার কোন গ্রাহক প্রাপকের পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা লিখার পর যদি অফিস ডেলিভারি নিতে চান তবে ঠিকানা শেষে কোন অফিস থেকে নিতে চান, সেই অফিসের নাম স্পষ্টাক্ষরে মেনশন করে দিতে হবে। তাহলে প্রাপক সংশ্লিষ্ট অফিস থেকে ডেলিভারিটা নিতে পারবেন। আমি নিম্নে দুটি ঠিকান মেনশন করছি, যা পর্যবেক্ষণে আমার লেখা পরিস্কার হবে।
- পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা বিহীন অফিস ডেলিভারির ঠিকানার নমুনা : -
প্রাপক :-
মিঃ রাজ
এস.এ পরিবহন।
শ্যামলী শাখা O/D, ঢাকা।
মোবাইল- 017######96
- পূর্ণাঙ্গ ঠিকানাসহ অফিস ডেলিভারির ঠিকানার নমুনা :-
প্রাপক :-
নবাব
বাসা -নবাব মঞ্জিল
বাসা -নবাব মঞ্জিল
বাসা নং-05, রোড নং-06, ব্লক-D, ফ্ল্যাট/এ্যাপার্টমেন্ট-B-5 (যদি থাকে),
ফ্লোর/লিফট্- 7 (যদি থাকে), মাষ্টারপাড়া, গাইবান্ধা।
ডেলিভারি পদ্ধতি- গাইবান্ধা O/D
মোবাইল নং -017######96
↠↠ তবে অফিস ডেলিভারির ক্ষে্ত্রে বিস্তারিত ঠিকানা না লেখাই উত্তম। তাতে বরং বিপত্তি ঘটে যায়।
২। হোম ডেলিভারির ঠিকানা : - প্রথমে মনে রাখতে হবে যে, পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা লিখলেই যে বুকিংকৃত পণ্যটি হোম ডেলিভারি হবে এমনটি নয়। ঠিকানাটি সংশ্লিষ্ট কুরিয়ার সার্ভিসের হোম ডেলিভারি সার্ভিসের রেঞ্জের মধ্যে হতে হবে। হোম ডেলিভারি পেতে হলে প্রাপকের ঠিকানা সবসময় পরিস্কারভাবে লিখতে হবে। কখনো অপূর্ণাঙ্গ ও ভুল ঠিকানা লিখে হোম ডেলিভারি পাওয়া যাবনা। এভাবে যায়, এই ঠিকানাতেই ডেলিভারি হয়, এই জায়গা সবার পরিচিত, এসব বলে অপূর্ণাঙ্গ ঠিকানা লিখে কখনো হোম ডেলিভারির উদ্দেশ্যে পার্সেল বুকিং করা ঠিক না। মনে রাখতে হবে যে, অপূর্ণাঙ্গ ঠিকানায় সচরাচর ডেলিভারি হলেও ডেলিভারি ম্যান কিন্তু তা নিজ দ্বায়িত্বে দিয়ে থাকেন। কোন কারণ বশতঃ হোম ডেলিভারিটা না হলে গ্রাহক কিন্তু জোড় গলায় হোম ডেলিভারি দাবী করতে পারবেনা। গ্রাহকের উচিৎ, নিজের দিক থেকে সবসময় স্বচ্ছ থাকা। যাই হোক, হোম ডেলিভারি পেতে হলে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে। যেমন...
কোনগুলো হোম ডেলিভারি হবে আর কোনগুলো হোম ডেলিভারি হবেনা। :-
আসলে সব ধরনের পণ্য হোম ডেলিভারি হয়না।এক্ষেত্রে কোন কোন পণ্য হোম ডেলিভারি হবে এবং তা কোন ধরণের ঠিকানায় হোম ডেলিভারি হবে, তা নিম্নে পৃথক পৃথকভাবে তুলে ধরছি যা পাঠক মহোদয়কে কে পরিস্কার ধারণা নিতে সক্ষম হবে।
↠ কি ধরনের পণ্য হোম ডেলিভারি হবে না :- যে সকল পণ্য কুরিয়ারের ভাষায় পার্সেল হিসেবে গণ্য হয়, সে সকল পণ্য হোম ডেলিভারি হয়না। তবে সরকারী অফিসসহ আধাসরকারী ও সায়ত্বশাসিত কোম্পানির কোন অফিসে পার্সেলও হোম ডেলিভারি হবে। এক্ষেত্রে রিসিভার অফিস জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রোপার এড়িয়ার মধ্যে হতে হবে।
↠ কি ধরণের পণ্য হোম ডেলিভারি হবে :- কি ধরনের পণ্য হোম ডেলিভারি হবে তা পাঠক সমাজের নিকট পরিস্কারভাবে তুলে ধরার নিমিত্তে আমি বহুল পরিচিত ’সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিস’ এর ভাষা ব্যবহার করছি। সুন্দরবন কুরিয়ারের ভাষায় নিন্মোল্লিখিত পণ্যগুলি হোম ডেলিভারি সার্ভিসের আওতায় আসবে।
↠↠ ব্যাকওয়ার্ড ও লোকাল পর্যায়ে কোন প্রকার হোম ডেলিভারি সম্ভব না। প্রতিটি জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রোপার এড়িয়ার মধ্যে হোম ডেলিভারি হবে। জেলা ও উপজেলা সদর পর্যায়ে সরকারী অফিসসহ আধাসরকারী ও সায়ত্বশাসিত কোম্পানি ও অফিস সহ সাধারণ গ্রাহকের বাসা-বাড়িতেও হোম ডেলিভারি হবে। তবে কোন কুরিয়ার থেকে কাঙ্কিত সেবা পেতে হলে আগে নিজেদের দিক থেকে স্বচ্ছ থাকতে হবে। আর যথাযথ সার্ভিস পেতে হলে যা যা ফলো করা দরকার তা ফলো করতে হবে।
অবশেষে সম্মানিত পাঠককে আমার লিখা পড়ার জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়ে লেখা শেষ করছি। সবা্ই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। এই কামনায়......❤
- প্রাপকের নাম অথবা প্রাপক হিসেবে প্রতিষ্ঠানের নাম।
- প্রাপক নিজে রিসিভ না করলে ওনার পক্ষ থেকে যিনি রিসিভ করবেন, তার নাম।
- প্রাতিষ্ঠানিক ঠিকানার ক্ষেত্রে প্রাপকের পদবী উল্লেখ করাটা ভালো।
- প্রাপকের পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা⇔ বাসার/ভবনের নাম → বাসা নং → রোড নং → ব্লক নং → ফ্ল্যাট/এ্যাপার্টমেন্ট নং (যদি থাকে) → ফ্লোর/লিফট্ নং (যদি থাকে) → এলাকার নাম → জেলার নাম।
- সবশেষে রিসিভারের সঠিক মোবাইল নাম্বার।
উপরোক্ত পদ্ধতি মেনে হোম ডেলিভারির ঠিকানা লিখলে ঠিকানাটি নিম্নরুপ হতে পারে...
প্রাপক :-
নবাব, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ
নবাব কর্পোরেশন লিঃ।
নবাব মঞ্জিল, বাসা নং-05, রোড নং-06, ব্লক-D, ফ্ল্যাট/এ্যাপার্টমেন্ট-B-5 (যদি থাকে),
নবাব কর্পোরেশন লিঃ।
নবাব মঞ্জিল, বাসা নং-05, রোড নং-06, ব্লক-D, ফ্ল্যাট/এ্যাপার্টমেন্ট-B-5 (যদি থাকে),
ফ্লোর/লিফট্- 7 (যদি থাকে), মাষ্টারপাড়া, গাইবান্ধা। H/D
মোবাইল নং -017######96
উপরোক্ত তথ্যাবলী উল্লেখ করার পর যদি কোন পণ্য হোম ডেলিভারি না হয়, তবে বুকিংকারী সংশ্লিষ্টি কুরিয়ার সার্ভিসে গিয়ে যথাযথ কতৃপক্ষের কাছে হোম ডেলিভারি না হওয়ার কারণ জানতে চেয়ে অভিযোগ করতে পারবেন।
⇒ নোট :-
কোনগুলো হোম ডেলিভারি হবে আর কোনগুলো হোম ডেলিভারি হবেনা। :-
আসলে সব ধরনের পণ্য হোম ডেলিভারি হয়না।এক্ষেত্রে কোন কোন পণ্য হোম ডেলিভারি হবে এবং তা কোন ধরণের ঠিকানায় হোম ডেলিভারি হবে, তা নিম্নে পৃথক পৃথকভাবে তুলে ধরছি যা পাঠক মহোদয়কে কে পরিস্কার ধারণা নিতে সক্ষম হবে।
↠ কি ধরনের পণ্য হোম ডেলিভারি হবে না :- যে সকল পণ্য কুরিয়ারের ভাষায় পার্সেল হিসেবে গণ্য হয়, সে সকল পণ্য হোম ডেলিভারি হয়না। তবে সরকারী অফিসসহ আধাসরকারী ও সায়ত্বশাসিত কোম্পানির কোন অফিসে পার্সেলও হোম ডেলিভারি হবে। এক্ষেত্রে রিসিভার অফিস জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রোপার এড়িয়ার মধ্যে হতে হবে।
↠ কি ধরণের পণ্য হোম ডেলিভারি হবে :- কি ধরনের পণ্য হোম ডেলিভারি হবে তা পাঠক সমাজের নিকট পরিস্কারভাবে তুলে ধরার নিমিত্তে আমি বহুল পরিচিত ’সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিস’ এর ভাষা ব্যবহার করছি। সুন্দরবন কুরিয়ারের ভাষায় নিন্মোল্লিখিত পণ্যগুলি হোম ডেলিভারি সার্ভিসের আওতায় আসবে।
- ডকুমেন্ট :- ডকুমেন্ট বলতে সাধারণত চিঠিপত্র, খাম, ও সর্বোচ্চমানের বুকিং সার্ভিস সুপার এক্সপ্রেস ডকুমেন্ট হোম ডেলিভারি হবে।
- নন-ডকুমেন্ট :- নন-ডকুমেন্ট বলতে সুন্দরবনের পলিব্যাগ (হলুদ, সাদা ও নীল) হোম ডেলিভারি হবে। তবে তা নরমাল ও আনকন্ডিশ ছাড়া বুকিং হতে হবে।
- কুরিয়ার পার্সেল :- যে সকল পণ্য সাধারণত পার্সেল হিসেবে বুকিং হয়না, বরং কুরিয়ার হিসেবে বুকিং হয়। হোম ডেলিভারি যোগ্য কুরিয়ার পার্সেল সাধারণত ১০০ গ্রাম থেকে শুরু করে ৩-৪ কেজি পর্যন্ত হতে পারে।
↠↠ ব্যাকওয়ার্ড ও লোকাল পর্যায়ে কোন প্রকার হোম ডেলিভারি সম্ভব না। প্রতিটি জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রোপার এড়িয়ার মধ্যে হোম ডেলিভারি হবে। জেলা ও উপজেলা সদর পর্যায়ে সরকারী অফিসসহ আধাসরকারী ও সায়ত্বশাসিত কোম্পানি ও অফিস সহ সাধারণ গ্রাহকের বাসা-বাড়িতেও হোম ডেলিভারি হবে। তবে কোন কুরিয়ার থেকে কাঙ্কিত সেবা পেতে হলে আগে নিজেদের দিক থেকে স্বচ্ছ থাকতে হবে। আর যথাযথ সার্ভিস পেতে হলে যা যা ফলো করা দরকার তা ফলো করতে হবে।
অবশেষে সম্মানিত পাঠককে আমার লিখা পড়ার জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়ে লেখা শেষ করছি। সবা্ই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। এই কামনায়......❤
No comments